শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর (১৫) আত্মহননের ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত এবং এমপিও বাদিলের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বুধবার (৫ ডিসেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, ভিকারুননেসা স্কুলের দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটির সব ধরণের অনিয়ম উঠে আসছে। অভিভাবকরাও নানা অনিয়মের কথা বলেছেন। ঐ ঘটনার জন্য দায়ী ৩ জনের নাম এসেছে।
অভিযুক্ত তিন শিক্ষক হলেন- ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৗস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিন্নাত আরা এবং শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্তে শিক্ষার্থী আত্মহননের প্ররোচণার জন্য এই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ায় বিভাগীয় মামলাসহ অন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই তিনজন শিক্ষকের এমপিও বাতিল করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, গত রোববার পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫)। ফোনে নকল থাকার অভিযোগ তুলে তাকে পরীক্ষা থেকে বহিস্কার করা হয়। এর পর তার বাবা-মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে তারা স্কুলে যান এবং মেয়ের হয়ে দফায় দফায় ক্ষমা চান। উপাধ্যক্ষের কক্ষ থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়। পরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষে তারা গেলে তিনিও তাদের অপমান করেন এবং স্কুল থেকে অরিত্রি অধিকারীকে ছাড়পত্র দেওয়ার হুমকি দেন। নিজের সামনে বাবা-মায়ের এমন অপমান সইতে না পেরে ওই দিন দুপুরে শান্তিনগরের বাসায় ফিরে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার শিক্ষার্থী অভিভাবকদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে ভিকারুননিসা ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বিক্ষোভের মধ্যেই অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি কমিটি করেছে। পাশাপাশি হাইকোর্টও এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
অরিত্রির মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে তার বাবা দিলীপ অধিকারী বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করেছেন। ৩০৫ ধারার এই মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতি শাখার প্রধান জিন্নাত আরা এবং অরিত্রির শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে আসামি করা হয়েছে।
সূত্র: বিডি২৪লাইভ